নিজস্ব প্রতিবেদক
বিমান টিকিট বিক্রিতে অস্বাভাবিক ভাড়া ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছেন, সময় দিলেও কেউ এই “ছাই দেওয়া হাত” থেকে বের হতে পারবে না। সোমবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীতে এয়ার টিকিটের দাম বৃদ্ধি রোধ ও নিরাপদ সমুদ্র পর্যটন নিশ্চিত করতে গৃহীত কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
অনিয়ম ও সিন্ডিকেটের চিত্র
শেখ বশিরউদ্দীন জানান, দেশে নিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সির সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার হলেও অনিবন্ধিত এজেন্সি ২০ হাজারের বেশি। এসব অনিবন্ধিত এজেন্সি পান দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় কৃত্রিম সংকট তৈরি করে টিকিটের দাম বাড়াচ্ছে। এমনকি জনশক্তি রপ্তানিকারকদেরও নিজস্ব ট্রাভেল এজেন্সি আছে।
তিনি বলেন, এজেন্সিগুলোকে টিকিটের গায়ে মূল্য লেখার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না। শুধু অফলাইন নয়, অনলাইন এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধেও গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। দেশের টিকিট বিদেশ থেকে বিক্রি হচ্ছে বলেও তদন্তে উঠে এসেছে।
তদন্ত ও ব্যবস্থা
অনিয়মে জড়িত এজেন্সিগুলোর তালিকা করা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “আমরা সংখ্যায় যাচ্ছি না। সামগ্রিকভাবে (৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল) এই নৈরাজ্য থামাতে চাই। এজন্য সব অংশীজনের সঙ্গে বসেছি।”
বর্তমানে বিমানবন্দরে চারজন ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করছেন। আরও একজন বাড়ানো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, নৈরাজ্য বেশি যেসব গন্তব্যে হচ্ছে, সেসব জায়গায় ম্যাজিস্ট্রেটরা প্রতিদিন চারটি করে প্রতিবেদন দেবেন। তার ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কঠোর আইন প্রয়োগের হুঁশিয়ারি
উপদেষ্টা বলেন, সিন্ডিকেটে জড়িত ট্রাভেল এজেন্টদের ট্যাক্স ফাইল খোলার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে। ২০১৩ সালের ট্রাভেল এজেন্সি আইনে টিকিটের গায়ে মূল্য না লিখলে লাইসেন্স বাতিল ও কারাদণ্ড—দুটোই শাস্তি হিসেবে রয়েছে।
তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “কেউ এই ছাই দেওয়া হাত থেকে রেহাই পাবে না। যারা নৈরাজ্যের সঙ্গে জড়িত, তারা কোনোভাবেই ছাড় পাবে না।”
এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।